রহমত নিউজ ডেস্ক 07 November, 2023 06:43 PM
মাত্র ৬ মাসে পবিত্র কুরআনের হাফেজ হয়েছেন সাত বছরের মাহদী হাসান ওয়াজকুরুনী। হাফেজ মাহদী মাত্র দুই বছর বয়সে বাবাকে হারান। মাহদী হাসান ওয়াজকুরুনীর বাড়ি শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার উত্তর কায়দা গ্রামে। সে মৃত হাবিব মিয়ার ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর তার পড়াশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন গ্রামের দূর সম্পর্কের চাচা নকলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নকলা দারুল উলুম মাদরাসা মুহতামিম মাওলানা আনছারুল্লাহ তারা।
দারুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আনছারুল্লাহ তারা বলেন, মাহদী আমার গ্ৰামের ছেলে। তার মা তাকে আমার মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছেন। আমি তার মেধা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। তার পরিবারের অবস্থার কথা জেনে আমি তার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছি। তার উচ্চ শিক্ষার জন্য যতটুকু সম্ভব সহায়তা করবো।
শিশু মাহদী বলেন, ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছি, সেই স্মৃতি আমার মনে নেই। আমার মা অনেক কষ্ট করে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছেন। এখন বড় হুজুর আমার পড়াশোনার খরচ বহন করেন। আমি ৬ মাসেই কুরআন শরিফ হিফজ করেছি। আমি বড় কারী, মাওলানা হতে চাই।
মাহদীর মা বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর আমি এখন অসহায়। বাড়িভিটা ছাড়া আমার আর কিছু নেই। আমার ছেলে মাহাদী অনেক মেধাবী। মাহাদী আর তার বোন মাদরাসায় পড়াশোনা করছে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষই তাদের পড়াশোনার খরচ বহন করছেন। নইলে এই বয়সেই তাদের শিশু শ্রমিক হয়ে কাজে নামতে হত। আমার আরেক ছেলে দোকানে কাজ করে। মাহাদীর আশা সে অনেক বড় আলেম হবে, আমার ছেলের স্বপ্ন পূরণে বিত্তবান বা সরকার এগিয়ে এলে উপকার হত, ছেলেটা পড়াশোনা চালিয়ে নিতে পারত।
মাহাদীর দুলাভাই বলেন, মাহদী পড়ালেখায় অনেক ভালো। ছোট থেকেই সে পড়ালেখায় অনেক মনোযোগী। তার কণ্ঠও অনেক ভালো। সে টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনে আয়োজিত কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতায় ময়মনসিংহ বিভাগে ২য় স্থান অর্জন করেছে। মাহাদীর মাত্র আড়াই বছর বয়সে আমার শশুর মারা গেছেন, সে ছোট থেকেই পড়ালেখায় আগ্রহী থাকা। পড়াশোনার আগ্রহের কারণেই এই সাফল্য পেয়েছে সে। তার জন্য আমরা গর্বিত।
নকলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, আমি আজই জানতে পেরেছি বিষয়টি। মাহদী শুধু নকলা নয় সারা বাংলাদেশের জন্য আল্লাহর দেওয়া উপহার। কোনো অবস্থাতেই যেন অর্থাভাবে তার পড়ালেখা বন্ধ না হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখবো। প্রাথমিক ভাবে আমরা তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ৫ হাজার টাকা শিক্ষা অনুদান দিয়েছি, ভবিষ্যতেও তার শিক্ষা সহায়তা অব্যাহত থাকবে।